কোন কিছু খুঁজতে চাইলে, বক্সে লিখুন

Monday 12 September 2022

যন্ত্র ছাড়াই যোগাযোগ।

যা মূলত নিউরন দ্বারা

নার্ভ সিস্টেম বা স্নায়ুতন্ত্র গঠনের একক নিউরন। নিউরন দ্বারা স্নায়ুতন্ত্র নিয়ন্ত্রিত হয়।

ধরা যাক আজ সকালে প্রচন্ড শীত, আমি শীতের মোটা কাপড় পড়ে আছি। আস্তে আস্তে রোদ কড়া হতে শুরু করলো। এবার আমি মোটা কাপড় খুলে হালকা কাপড় পড়বো। সূর্যের তাপমাত্রা আমার ত্বকে লাগবে এবং ত্বক হতে স্নায়ুতন্ত্র অর্থ্যাৎ নিউরন তাপমাত্রার বার্তা মস্তিষ্কে পাঠাবে এবং আমি মোটা কাপড় ছেড়ে হালকা কাপড় পড়বো। 

মানুষের পঞ্চ ইন্দ্রিয় (চোখ, কান, নাক, জিহ্বা, ত্বক) হচ্ছে স্বায়ুতন্ত্র। চোখ দিয়ে ভয়ানক কিছু দেখলাম এবং সে বার্তা নিউরনের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠাবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করবে। পঞ্চ ইন্দ্রিয় বা ফিফথ সেন্স (Fifth Senese) হচ্ছে মূলত স্নায়ুতন্ত্র যার মূলে আছে নিউরন। সিক্স সেন্স বা ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় নামে একটা বিষয় আমরা সব সময় শুনে থাকি। সিক্স সেন্স হচ্ছে আমার অবচেতন মন। মনে মনে যা চিন্তা করলাম এবং তাই হয়ে গেল, এটাই সিক্স সেন্স। ভাবলেন আপনার বন্ধুকে কল দিবেন, ঠিক আপনার বন্ধু কল দিয়ে দিলেন। আপনার মনে হলো বাবা হয়তো অসুস্থ, খোঁজ নিলেন ঠিকই অসুস্থ। আপনার সন্তান অনেক দূরে আছে। আপনার মনে হচ্ছে তার হয়তো মন খারাপ, খোঁজ নিয়ে দেখলেন তার চাকরি চলে গেছে। এটাই সিক্স সেন্স, অনেকে তৃতীয় চোখ বলে থাকে। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় এটা আসলে কিভাবে সম্ভব বা আদৌ সম্ভব কিনা? এটার উত্তর আমি জানি না। সম্ভবত উত্তরটা এমন হতে পারে-

পদার্থ বিজ্ঞানের একটা শাখা কোয়ান্টাম বলবিদ্যা সম্ভবত এরকম ধারনা দেয় যে, পৃথিবিীর কোন কিছুই বিচ্ছিন্ন নয়। সে যতই ক্ষুদ্র হোক না কেন। কোন না কোন ভাবে সংযুক্ত। পৃথিবীর সব নিউরন কোন না কোন ভাবে একে অপরের সাথে যুক্ত। যেমন ভাবে পৃথিবীর প্রতিটি মোবাইল সংযুক্ত। মোবাইলে কারও সাথে যোগাযোগ করার জন্য ইউনিক মোবাইল নাম্বার লাগবে। কারও সাথে যোগাযোগ করার অর্থ ঐ লোকের মোবাইল নাম্বারের সাথে যোগাযোগ করা অর্থ্যাৎ এক কান থেকে আর এক কানে যোগাযোগ যা একটা সেন্স ওরগান। যোগাযোগ হয় মূলত এক কান থেকে আর এক কান অর্থ্যাৎ এক নিউরন থেকে আর এক নিউরন। মোবাইল নাম্বারটি ঐ লোকের আইডেনটিটি, যা একটি কোড। আমার মনে হয় প্রতিটি নিউরনের গঠন ইউনিক।

ধরা যাক আমি চিন্তা করলাম আমার মাকে কল দিবো। অতি দ্রুত (ন্যানো বা পিকো সেকেন্ডের মধ্যে) নিউরন ম্যাসেজ তৈরি করে ফেললো এবং অতি দ্রুত আমার মায়ের নিউরনের পাঠাই দিলো এবং আমার মা মোবাইল হাতে নিয়ে কল দেওয়া শুরু করলো।

বর্তমানে একটা মানুষ বলতে তার মোবাইল নাম্বার বা ফেসবুক আইডি, ইমেইল আইডি ইত্যাদি বুঝে থাকি। যোগাযোগ করার জন্য ব্যাক্তিকে লাগে না। নির্দিষ্ট কোড বা আইডি লাগে। এটা কম্পিউটারের বা বিজ্ঞানের ফসল। বিজ্ঞানের যেকোন আবিষ্কার বেশী দিন রাজত্ব করতে পারে না। গত শতকে কলের গান ছিল, যা এখন নাই। টেলিফোন, যা প্রায় নাই। রেডিও ছিল যা এখন নাই প্রায়। টেলিভিশন এখনো আছে ধুকু ধুকু করে। মোবাইলের জায়গা ফেসবুক, মেসেন্জার, হোয়াটস অ্যাপ ইত্যাদি দখল করে নিচ্ছে। আগের তুলনায় ইদানিং বিজ্ঞান খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে।

অতি দ্রুত হয়তো নিউরন টু নিউরন যোগাযোগের অমূল পরিবর্তন নিয়ে হাজির হবে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান অবিষ্কার করবে, কিভাবে কোন প্রকার যন্ত্র ছাড়াই একজন থেকে আর এক জনে ম্যাসেজ পাঠানো যায়। যেহেতু নিউরনের গঠনগুলো ইউনিক, বিজ্ঞান প্রতিটি নিউরনকে একটি কোড দিয়ে চিহ্নিত করবে। যেমন আমি হয়তো মনে মনে আমার নিউরনকে বলবো abcx (এটা আমার মায়ের নিউরনের কোড নাম্বার) কে বলো ঔষধ ঠিক মতো খাইলো কিনা। মায়ের মাথায় টিক টিক করতে শুরু করলো। মা দেখলো যে, আমার ছেলে ঔষধ খাইতে বলছে।

আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা শেয়ার করে শেষ করবো। আমি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে চাকরি করি। প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর পরীক্ষা হয় এবং সনদ পত্র বোর্ড হতে আসে। গত কয়েকদিন আগে ১৪ ব্যাচের সনদ কবে আসবে তাই নিয়ে চিন্তা করলাম। তার দশ মিনিট পর ডাকপিয়ন সনদ নিয়ে হাজির। ডাক পিয়ন হয়তো সনদের প্যাকেটটি হাতে নিয়ে চিন্তা করলো। সঙ্গে সঙ্গে পিয়নের নিউরন একটা সিগন্যাল তৈরি করলো এবং সেটা শুধু মাত্র আমার নিউরনের জন্য। পিয়নের নিউরন থেকে আমার নিউরন সিগন্যাল গ্রহণ করলো এবং আমি চিন্তা করতে শুরু করলাম।

নিউরনের এই ক্ষমতার কারণে সন্তানের কোন সমস্যা হলে মা বুঝতে পারে। হয়তো মায়ের সাথে সন্তানের নিউরনের কানেক্টিভিটি একটু বেশিই।

নিউরন
নিউরন

১১.০৯.২২ খ্রি:

রাত ০১.৩০


No comments:

বই পড়ুন

একশো বছর আগে প্রকাশিত যে বইটি এখন বাজারে পাওয়া যায় তা ঐ সময়ের সবচেয়ে ভালো বই। বইয়ের লেখক ঐ সময়ের সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষ। লেখক তার সর্বোচ্চ মেধা এবং সবচেয়ে ভালো কথা গুলো লেখেন। সুতরাং বই পড়ছেন তো সবচেয়ে জ্ঞানী লোকের সবচেয়ে ভালো কথা গুলো পড়ছেন।