কোন কিছু খুঁজতে চাইলে, বক্সে লিখুন

Monday 17 March 2014

বে উপায় প্রেমিক 2

পৃথিবীর সবকিছু রহস্যময়। কেন জন্ম নিলাম, আজ কেন বেঁচে আছি, আরোও অনেক দিন কেন বেঁচে থাকব। পৃথিবী চলতে থাকুক তার নিয়মে আমি থাকব নীরব, নিথর, স্থির। পৃথিবী আমার জন্য কিছুই না, জন্মেছি তার নিয়মে মারা যাব তার নিয়মে। মাঝখানে কেন এত অস্থিরতায় চলতে থাকবো। শপথ নিলাম ধ্রুব হয়ে থাকব, নিশ্চল, স্থির তাতেই বা কি ক্ষতি আমার।
আরোও দেখতে ক্লিক কর

এটাই যদি হতো তাহলে সবচেয়ে ভাল ছিল। কিন্তু মানব সমাজ চলন্ত, ছুটন্ত, ছুটছে তো ছুটছেই। কেউ ছুটছে বৃদ্ধ হবার জন্য, কেউ ছুটছে তরুন হবার জন্য, কেউ ছুটছে দিক-বেদিক। আমি সবসময় চাই তরুন হই, তারুন্যের প্রত্যাশায় ছুটতে থাকি, মনে হয় তারুন্য কে মুষ্টি করি আমার পাশে বসাই, আমার ড্রেসিং এর পাশে ঝুলিয়ে রাখি। যতবার মুখ দেখব ততবার যেন তাকে পাই। তারুন্য আমাকে ডাকে ইশারা দিয়ে, হাতছানি দিয়ে। বলে তুমি এস, আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি। আমি উদ্বেলিত হই, শিহরিত হই তারুন্যের পথে ছুটতে শুরু করি। অনেক শক্তি সঞ্চয় করে ছুটা শুরু করি। ছুটতে থাকি, ছুটতে থাকি সকাল পেড়িয়ে দুপুর হয় ক্লান্ত শরীরে ছুটতে থাকি, দুপুর গড়িয়ে বিকাল হয় তারপরও ছুটতেই থাকি। গোধূলি লগ্নে হঠাৎ ভয় এসে জাপটে ধরতে চাই, আমি তারপরও ছুটতে থাকি।  . . . .এবার আর পারিনা সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত হয়, নিশ্চুপ নীরবতায় আমি একা হয়ে যায়। মাঝপথে যখন অন্ধকার হয় উত্তর-দক্ষিন হারিয়ে ফেলি, দিক বেদিক ছুটাছুটি করি। আবার হয়ত সকাল বেলা শুরুতে ফিরে আসি। পারিনা তারুন্যকে  গ্রহন করতে। হয়ত মাঝপথে চোখ বন্ধ করে একচোখ ঘুমিয়ে পড়ি। ভাবনায় ভালবাসা এসে উকি মারে। তুমি আমি পাশাপাশি, আমার ডান হাত ডান কানের নিচে আর বাম হাত তোমার পিঠের উপর ছড়ানো। কাত হয়ে শুয়ে থাকা, ডান পা সোজা বিছানায়। তোমার চোখ আমার চোখ বরাবর, অপলক দৃষ্টিতে তোমার পানে চেয়ে আছি। তোমার শ্বাস-প্রশ্বাসের কার্বন ডাই অক্রাইড ঠিক আমার নাক বরাবর এসে শিস দিয়ে ডাকছে আমায়। আমায় বলছে আমি প্রস্তুত তোমার জন্য। আমি ভয় পাই বুকটা ধুক ধুক করে, যদি তুমি সাড়া না দাও। তোমার এলোমেলো  পড়ন্ত বিকালের প্রতিচ্ছবির মত লম্বা চুল, বাম গালের নিচ হয়ে বালিশের উপর দিয়ে আমার ডান গাল স্পর্শ দিয়ে যাই। আমি আশ্চর্য হয়ে যায়। এ কিসের মোহ আবদ্ধে আকড়ে ধরে, বুঝতে পারি না। যৌবনের কামেজ উত্তেজনা তার মান বাড়াতে থাকে। জানিনা তোমার ইচ্ছায় কি অনিচ্ছায় সমর্পন করে নাও আমাকে। হতভাগার কাপড় ময়লা করা ছাড়া কোন উপায় থাকে না।



সত্যিকার অর্থে হতভাগা আমি। দিনাজপুর ম্যাস জীবনে কখনও একা মনে হত না। সবাই খুব আপন ছিল, সবাই সবাইকে খুব ভাল বাসত। অনার্স শেষ করতেছি প্রায়, কর্ম জীবনে যাওয়ার প্রস্তুতি চলছে। রংপুর হতে ঘুরে এসেছি, ঢাকা হতে ঘুরে  আসলাম। খুব কঠিন সময় পার করছি। খুব একা আমি, বড় কঠিন একা, আপন বলতে কিছু নেই আমার। ঢাকায় অনেক পরিচিত লোক আছে কেউ সাদরে গ্রহন করে না, যারা খুব আপন তারাও না। সবাই আমাকে ওটকো মনে করে সবাই আপদ মনে করে। একটানা পাঁচদিন এক বন্ধুর কাছে ছিলাম ও জব করে তাই খুব বেশী সময় দিতে পারে নাই। একা একা ঘুরাফেরা করি। একদিন দুপুরে বসে আছি, একাকীত্বের  বিষাক্ত ছোবলে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছি। একাকীত্বের  গভীর ঠোকরের আঘাতে, ফিরে যায় অতীতের ঘুনে ধরা স্মৃতির পাতায়। প্রতিটি পৃষ্টায় দেখি তোমার ছবি। সেই তুমি ক্লাশ সিক্সে পড়া ছোট কন্যা। অনুমানিক সকাল ১০ টা প্রাচীর বেষ্টিত মসজিদের টিউবওয়েলে আমি, তুমি রাস্তায় দাড়িয়ে। তোমায় দেখছি, খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছি। দেখছি প্রানচঞ্চলা মুখ আবরন। হঠাৎ নজর পড়ে তোমার বুকের উপর, এখনও উবু ওঠে নাই। বাম হাতে টিউবওয়েলে চাপ দিলাম, এক পশলা পানি ছিটিয়ে দিলাম তোমার উপর। তুমি অনেক তেজি মেয়ে, কি চোখ গরম তোমার। অপরাধী হয়ে চুপ থাকি, তখন কিছু বলতে পারি নাই। তখনকার এক পশলা পানি এখনও চোখের কোন এক কোণে জায়গা করে বসে আছে। চোখ আমার ছল ছল করে, কয়েক ফোটা পানি অশ্র“ হয়ে ধরনী তার  পিপাসা নিবারন করে। খুব! খুব বেশী, অনেক বেশী মনে পড়ে তোমায়। কথা বলার ইচ্ছা করে, তাই শেষে ২৫২ নাম্বার দিয়ে ফোন দিলাম ওপাশের কন্ঠটা তোমার আব্বার। একাকীত্বের বিশাল ছোবলে সব হারিয়ে ফেলছি। আমার সামনে পিছনে শুধু শূন্যতা। বড় বড় শূন্যতায় সব আবছা মনে হয়। আপনজন বলতে কাউকে খুজে পাইনা। মনের দৃষ্টিতে আপনজনের লাইব্রেরিতে ঢুকি। প্রথমে যাই  পরিবারের তাকে একটার পর একটা বই ওল্টাতে থাকি, পোড়া কপাল আমার। বন্ধুদের তাকে যাই। সবচেয়ে বড় তালিকা এখানেই পাই।  স্কুলের বন্ধু, কলেজের বন্ধু, বিশ্ব বিদ্যালয়ের বন্ধু, ম্যাসের বন্ধু। কিন্তু পোড়া কপাল, আসল মানুষ খুজে পাই না। জরাজীর্ণ প্রেমের খাতার কভার পৃষ্টা খুলে দেখি তোমার নাম, সম্পাদনায় তুমি , অলংকরনে তুমি, প্রচ্ছদে তুমি। আরোও সামনে যাই দেখি তোমার ছবি, ছোট লাল টিপ দিয়ে অপরূপ সুন্দরী তুমি। আর একটু সামনে যাই দেখি তোমার ছবি, বাম হাতের তর্জনী দিয়ে বাম গালে কি সুন্দর অভরন তোমার। একমাত্র তুমিই পার একাকীত্বের ছোবল থেকে রক্ষা করতে। একমাত্র তুমিই পার রাতের অন্ধকারে দিক হারানো মানুষটিকে পথ দেখাতে। তারুন্যের শক্তি যেখানে স্তিমিত, তোমার উৎসাহে আবার পারি পুরোদমে চলতে। আমার তারুন্যের জন্য তোমাকে খুব প্রয়োজন। গোধূলি লগ্নে তারুন্য যেখনে ভয়ে কাতর, তুমিই পার ভয়কে জয় করাতে। পাশে এসে বস অনেক সুখ দিব তোমায়।


কেমন লাগল পরামর্শ আশা করছি।

No comments:

বই পড়ুন

একশো বছর আগে প্রকাশিত যে বইটি এখন বাজারে পাওয়া যায় তা ঐ সময়ের সবচেয়ে ভালো বই। বইয়ের লেখক ঐ সময়ের সবচেয়ে জ্ঞানী মানুষ। লেখক তার সর্বোচ্চ মেধা এবং সবচেয়ে ভালো কথা গুলো লেখেন। সুতরাং বই পড়ছেন তো সবচেয়ে জ্ঞানী লোকের সবচেয়ে ভালো কথা গুলো পড়ছেন।